শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৩

শরীরের বাড়তি ওজন আর নয়

কিশোর কিশোরি থেকে তরুণ, মধ্যবয়স্ক সবাই এখন ছুটছে স্লিম ফিগারের পেছনে। আমাদের অনেকের জীবনেই স্থূলতা বা বাড়তি ওজন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়তি ওজন শুধু শারীরিক নয় বিভিন্ন মানসিক ও সামাজিক সমস্যারও কারণ হয়ে দেখা দেয়। তাই আমরা বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ দেহ আর কাঙ্ক্ষিত ফিগার পেতে চাই।
এটা সত্যি চাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো কার্পণ্য নেই, তবে সমস্যা দেখা যায় কাঙ্ক্ষিত সেই গোলে যেতে আমরা যে পথ অবলম্বন করি সেখানে।
এটা বলছি এজন্য যে, আমরা ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রথম যা করি তা হচ্ছে খাবার নিয়ন্ত্রণ। আমাদের বাড়তি ওজনের জন্য যত শত্রুতা যেন শুধু খাবারের সঙ্গে। কয়েক দিন না খেয়ে থেকে অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে যাই, আর কেউ কেউ এক সপ্তাহেও কোনো পরিবর্তন না দেখে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে আবার আগের মতোই খেতে শুরু করেন।
অতএব ফলাফল হয় শূন্য। আসুন নতুন বছরের প্রথম তিন মাস টার্গেট নিয়ে চেষ্টা করি ওজন কমানোর। এই তিনমাস একটু কষ্ট হলেও নিয়মগুলো মেনে চলি, তারপর ওজন মেপে দেখি।
আসুন আমরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার কয়েকটি টিপস সহজভাবে জেনে নেই:
খেতে হবে
  • প্রচুর পানি পান করুন
  • প্রতিবার খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে একগ্লাস পানি পান করুন
  • উচ্চ শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য যেমন—চাল, আলু নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে
  • কম ক্যালরিযুক্ত তাজা ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে পারেন
  • প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করুন
  • সাধারণ চা বা কফির পরিবর্তে সবুজ চা পান করুন
  • শসা ও ভিটামিন সি জাতীয় টক ফল ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • তিতা স্বাদযুক্ত সবজি বিশেষ করে করলা বাড়তি ওজন কমানোর জন্য খুবই কার্যকর
  • মসলাজাতীয় খাবার যেমন: আদা, দারচিনি, কালো মরিচ ওজন কমাতে সাহায্য
  • শীতের সবজি বাঁধাকপি খেলে ওজন কমে কাঁচা বা রান্না যেভাবে ইচ্ছা বেশি পরিমাণে খান
খাওয়া যাবে না
  • খাওয়ার সময় অতিরিক্ত লবণ খেলে এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে
  • উচ্চক্যালরি ও উচ্চ ফ্যাটযুক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন
  • মিষ্টি শরবত, কোমল পানীয়, সব রকম মিষ্টি, তেলে ভাজা খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনা ফল, ঘি, মাখন, পনির, দুধের সর এসব খাবার যত পছন্দেরই হোক বাদ দিতে হবে
  • রাতে খাবারের পর অনেকেই অতিরিক্ত কিছু খেতে পছন্দ করেন
  • অপ্রয়োজনীয় এ খাবারটুকু একদম বাড়তি ওজন যোগ করে আমাদের শরীরে
  • কোনো সফলতা সেলিব্রেট করার সময় পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে খাবার খাওয়ার প্লান বাদ দিয়ে বরং কোথাও ঘুরে আসুন
কায়িক শ্রম, ব্যায়াম
একটি কথা মনে রাখা দরকার, শুধু খাদ্য নিয়ন্ত্রণই আমাদের ওজন কমাতে পারে না। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে যদি ৫০০ ক্যালোরি কমাতে পারি তাহলে ওজন কমে প্রতিসপ্তাহে আধা কেজি। কিন্তু আমরা প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটি, সাইকেল চালাই অথবা সাঁতার কাটি তখন দেখবেন ওজন কমছে ২ গুণ। তবে যারা কায়িক শ্রম বেশি করেন তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। সময়ের অভাবে যারা আলাদা করে এক্সারসাইজ করতে পারেন না, তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসেই কিছু ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করে নিন। আর কাছাকাছি দূরত্বে কোথাও যেতে হলে হেঁটে যান, ওপরে উঠতে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়িতে চলুন। এক গ্লাস পানি বা প্রিন্ট দেওয়া কাগজ আনতে কাউকে না বলে নিজেই উঠে গিয়ে নিয়ে নিন।
শরীরের বাড়তি ওজন এক সপ্তাহে বাড়েনি, তাই খুব অল্প দিনে কমে যাবে এটা ভাবা ঠিক নয়, দীর্ঘ তিন মাসের পরিকল্পনা করুন, ধৈর্য ধরে চেষ্টা করুন স্বপ্নের সেই হারানো কাঙ্ক্ষিত ফিগার পেয়ে যাবেন মাত্র তিন মাসে।

২টি মন্তব্য: